থার্টি ফার্স্ট নাইট এবং হ্যাপি নিউ ইয়ার (নববর্ষ) উৎযাপন করা মুসলিমদের
সংস্কৃতি নয়। বরং এটা হচ্ছে বিজাতীয়-বিধর্মীয় কাফির, মুশরিকদের সংস্কৃতি।
মনে রাখতে হবে সংস্কৃতির নামে প্রচলিত কিছু রীতিনীতি এবং আচার-আচরন,
অনুষ্ঠান ইসলামের মৌলিক চিন্তা বিরোধী। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় বর্তমান
সময়ের অধিকাংশ মুসলিম শুধুমাত্র কুরআন ও সুন্নাহর চর্চা করা খাঁটি মুসলিম
নয়। তারা হচ্ছে বিজাতীয়-বিধর্মীয়
কাফির মুশরিকদের সংস্কৃতির চর্চা করা মিশ্রিত মুসলিম।
কাফির, মুশরিক, ইহুদী, খ্রিষ্টানদের (অমূসলিমদের) পালনকৃত উৎসব উৎযাপন করা
হারাম। কেননা এইগুলো উৎযাপন করা রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে প্রমানিত নয়। এগুলো বিধর্মীদের ধর্মীয় উৎসব আর মুসলিমদের জন্য
বিধর্মীদের অনুসরণ
করা সরাসরি হারাম।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:- “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও
নাসারাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না, তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের
মধ্যে কেউ
তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে, নিশ্চয় আল্লাহ
যালিমদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।” [সূরা আল-মায়িদাহ আয়াত নাম্বার:-৫১]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্য হতে কেউ তার দ্বীন হতে ফিরে গেলে সত্বর আল্লাহ
এমন এক সম্প্রদায়কে নিয়ে যাদেরকে তিনি ভালবাসেন আর তারাও তাঁকে ভালবাসবে,
তারা মুমিনদের প্রতি কোমল আর কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে, তারা আল্লাহর পথে
যুদ্ধ করবে, কোন নিন্দুকের নিন্দাকে তারা ভয় করবে না, এটা আল্লাহর
অনুগ্রহ-যাকে ইচ্ছে তিনি দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যের অধিকারী,
সর্বজ্ঞ।” [সূরা আল-মায়িদাহ আয়াত
নাম্বার:-৫৪]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে যারা
তোমাদের দ্বীনকে হাসি- তামাসা ও খেলার বস্তু হিসাবে গ্রহণ করে তাদেরকে এবং
কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর যদি তোমরা মুমিন
হও।”
[সূরা আল-মায়িদাহ আয়াত নাম্বার:-৫৭]।
আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গোপনে নয় বরং প্রকাশ্যেই বলতে শুনেছিঃ
সাবধান! অমুক বংশের লোকেরা আমার বন্ধু নয়। বরং আমার বন্ধু হচ্ছেন আল্লাহ ও
পূন্যবান মূমিনগণ।”
[বুখারী হাঃ ৫৯৯০; মুসলিম হাঃ ২১৫; আহমাদ হাঃ ১৭৩৪৮]
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি অন্য কোন
সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য/সাদৃশ্য রেখে চলে সে তাদের অন্তর্ভূক্ত।” [আবূ
দাঊদ হাঃ ৩৫১৪]
আব্দুল্লাহ বিন আমর হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি অমুসলিম/অনারবীয়
(কাফির) দেশে বসবাস করে সে যদি সে দেশের নববর্ষ মেহেরজান উৎযাপন করে এবং
বাহ্যিকভাবে তাদের সাথে সাদৃশ্য রাখে, এমনকি এ অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে
তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে তাদের (কাফিরদের) সাথে হাশর করা হবে। [বায়হাকী,
সনদ সহীহ/বিশুদ্ধ, মাজমুয়াতুত তাওহীদ ২৭৩]।
সুতরাং নতুন বছরের আগমনে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য এবং চলতি বছরকে বিদায়
জানানের জন্য সে উপলক্ষে অনুষ্ঠানাদি করা বিধর্মীয় সংস্কৃতি। এগুলোর সাথে ইসলামের
কোনরূপ সম্পর্ক নেই।
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম কখনো এসব
পালন করেননি। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি
বিধর্মীদের সাদৃশ্য
অবলম্বন করবে, সে তাদের মধ্যে গণ্য হবে।” [আবূ দাঊদ হাঃ ৪০৩১; মিশকাত হাঃ ৪৩৪৭]।
অতএব এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করার অর্থ হলো সরাসরি আল্লাহ
তাআলা ও তাঁর রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আদেশ অমান্য করা।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:- “তোমরা পাপ ও সীমালংঘনের কাজে পরস্পরকে
সহযোগিতা করো না।” [সূরা আল-মায়িদাহ আয়াত নাম্বার:-০২]।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যেন আমাদের সকল প্রকার ইসলাম বিরোধী কাজ থেকে রক্ষা করেন। আমীন
No comments:
Post a Comment