জান্নাতে
নারীদের অবস্থা কী হবে, জান্নাতে তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে- এ ব্যাপারে
এমন কয়েকটি পয়েন্ট এই লেখায় একত্রিত করা হয়েছে, যা থেকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট
ধারণায় উপনীত হওয়া যাবে।
আমাদের উচিত হবে নারীরা জান্নাতে তাদের জন্য অপেক্ষমান নেকি ও নেয়ামত
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তাদেরকে হতোদ্যম না করা। কারণ, মানব প্রকৃতি তার
আগামী ও ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে পছন্দ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামও সাহাবা রাজিআল্লাহু আনহুমের জান্নাত ও জান্নাতের নেয়ামত
সংক্রান্ত এ ধরনের প্রশ্ন শুনে অপছন্দ করেন নি। যেমন আবূ হুরায়রা
রাজিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল,
জান্নাত সম্পর্কে আমাদের ধারণা দিন। কী দিয়ে জান্নাত নির্মিত হয়েছে? তিনি
বললেন, ‘তার দেয়ালের একটি করে ইট সোনা দিয়ে এবং আরেকটি ইট রুপা দিয়ে
নির্মিত। তার সিমেন্ট হলো উন্নত মৃগনাভী, তার প্লাস্টার ইয়াকূত ও মোতি এবং
তার মাটি ওয়ারছ (নামের সুগন্ধি) ও জাফরান। যারা এতে প্রবেশ করবে তারা অমর
হবে; কখনো মারা যাবে না। সুখী হবে; অসুখী হবে না। তাদের যৌবন শীর্ণ হবে না।
আর তাদের কাপড় ছিন্নভিন্ন করা হবে না।’ [মুসনাদ আহমদ : ৯৭৪৪ ; মুসনাদ
দারেমী : ২৮৬৩]
আরেকবার তাঁরা জিজ্ঞেস করেন, যেমনটি বর্ণিত হয়েছে আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু
আনহু থেকে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে
জিজ্ঞেস করা হলো, জান্নাতে আমরা কি আমাদের স্ত্রীদের কাছে পৌঁছতে পারব?
তিনি বললেন, ‘কোনো কোনো ব্যক্তি (জান্নাতে) দিনে একশত জন কুমারীর কাছে
পৌঁছবে।’ [তাবরানী, আল-মু‘জামুল কাবীর : ১৩০৫]
মানব মন বলতেই- চাই তা নর বা নারী হোক- জান্নাত ও জান্নাতের মনোরম
নেয়ামতসমূহের আলোচনা শুনতেই তা আগ্রহী ও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। নেক আমল বাদ
দিয়ে কেবল স্বপ্ন বিলাস না হলে তা উত্তম বৈ কি। কারণ আল্লাহ তায়ালা
মুমিনদের উদ্দেশে বলেন, ‘আর এটিই জান্নাত, নিজেদের আমলের ফলস্বরূপ
তোমাদেরকে এর অধিকারী করা হয়েছে।’ [সূরা আয্-যুখরুফ, আয়াত : ৭২]
তাই দেখা যায়, সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম জান্নাতের বিবরণ শুনে
নিজেদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আর আমলের মাধ্যমে সেগুলোকে কার্যে পরিণত
করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে
মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও জমিনের সমান, যা
মুত্তাকীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৩]
এ আয়াত থেকে অনুধাবিত হয় যে, জান্নাতকে প্রস্তুত করা হয়েছে খোদাভীরুদের
জন্য। জান্নাত ও জান্নাতের নেয়ামতসমূহ নারী বাদে কেবল পুরুষদের জন্য নয়।
বরং তা উভয় শ্রেণীর খোদাভীরুদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এ বিষয়টিকে
দ্ব্যর্থহীন করে আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া তায়ালা বলেন, ‘আর পুরুষ কিংবা নারীর
মধ্য থেকে যে নেককাজ করবে এমতাবস্থায় যে, সে মুমিন, তাহলে তারা জান্নাতে
প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি খেজুরবীচির আবরণ পরিমাণ জুলুমও করা হবে না।’
[সূরা আন-নিসা, আয়াত : ১২৪]
নারীদের কর্তব্য হবে জান্নাতে প্রবেশের বিস্তারিত তথ্যানুসন্ধান আর এ
সংক্রান্ত অপ্রয়োজনীয় প্রশ্নের তুবড়ি না ছুটানো। যেমন : জান্নাতে তাদের কী
করা হবে, তারা কোথায় থাকবে ইত্যাকার প্রশ্ন। ভাবখানা এমন যে, সে যেন কোনো
জীবননাশা মরুতে পা রাখতে যাচ্ছে !
তার জন্য এ কথা জানাই যথেষ্ট হওয়া উচিত যে, শুধু জান্নাতে প্রবেশের বদৌলতেই
তার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাবৎ দুঃখ ও গ্লানী দূর হয়ে যাবে। সেসব রূপান্তরিত
হবে অপার্থিব সৌভাগ্য এবং অনন্ত শান্তিতে। জান্নাত সম্পর্কে আল্লাহর এ
বিবরণই তার জন্য যথেষ্ট হতে পারে, যেখানে তিনি বলেছেন : ‘সেখানে তাদেরকে
ক্লান্তি স্পর্শ করবে না এবং তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃতও হবে না।’ [সূরা
আল-হিজর, আয়াত : ৪৮]
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘স্বর্ণখচিত থালা ও পানপাত্র নিয়ে তাদেরকে
প্রদক্ষিণ করা হবে, সেখানে মন যা চায় আর যাতে চোখ তৃপ্ত হয় তা-ই থাকবে এবং
সেখানে তোমরা হবে স্থায়ী।’ [সূরা আয্-যুখরুফ, আয়াত : ৭১]
এসবের আগে তার জন্য যথেষ্ট হতে পারে জান্নাতের অধিবাসীদের সম্পর্কে আল্লাহর
এই বাণী, যেখানে তিনি বলেন : ‘আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারাও
তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। এটা মহাসাফল্য।’ [সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ১১৯]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেখানেই জান্নাতের নেয়ামতরাজির আলোচনা করেন, যার
মধ্যে রয়েছে অসংখ্য পদের সুখাদ্য, অনির্বচনীয় সুন্দর দৃশ্যাবলি, সুরম্য সব
আবাস এবং অনিন্দ্য বস্ত্রসামগ্রী, তার সবই নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণীর জন্য
প্রস্তত করা হয়েছে। পূর্বে উল্লেখিত নিয়ামতসম্ভার সবাই ভোগ করবে জান্নাতে।
বাকি থাকে কেবল এই প্রশ্ন, আল্লাহ তো পুরুষদেরকে ডাগর চোখ বিশিষ্ট হূর ও
অপরূপা নারীদের কথা বলে জান্নাতের প্রতি আগ্রহী ও অনুপ্রাণিত করেছেন। অথচ
নারীদের প্রলুব্ধকর এমন কিছু বলেন নি। নারীরা সাধারণ এরই কারণ জানতে চান।
এর জবাবে আমি বলি :
১- প্রথমত আল্লাহর এই বাণীটি আমাদের মাথায় রাখতে হবে : ‘তিনি যা করেন সে
ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা যাবে না; বরং তাদেরকেই প্রশ্ন করা হবে।’ [সূরা
আল-আম্বিয়া, আয়াত : ২৩]
তবে শরীয়তের সুনির্দিষ্ট উদ্ধৃতি এবং ইসলামের মূলনীতির আলোকে এর হেকমত ও তাৎপর্য অনুধাবনের মানসিকতায় কোনো দোষ নেই।
নারী প্রকৃতি বলতেই লজ্জার ভূষণে শোভিত। এ জন্যই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সে
নেয়ামতের বর্ণনা দিয়ে জান্নাতের প্রতি লালায়িত করেন নি যা তাদেরকে লজ্জায়
মাথা অবনত করে।
এটাও সুবিদিত যে, নরের প্রতি নারীর আকর্ষণ ঠিক তেমন নয় যেমন নারীর প্রতি
নরের আকর্ষণ। তাই দেখা যায় আল্লাহ জান্নাতে নারীর কথা বলে পুরুষদের আগ্রহী
করেছেন যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত বাণীকেও প্রমাণ
করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমার পরে আমি
পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে ক্ষতিকর আর কিছু রেখে যাই নি।’ [বুখারি : ৫০৯৬;
মুসলিম : ৭১২২]
পক্ষান্তরে পুরুষের প্রতি আকর্ষণের চেয়েও নারীদের আকর্ষণ বেশি অলংকার ও
পোশাকের সৌন্দর্যের প্রতি। কারণ এটি তাদের সহজাত প্রকৃতি। যেমন আল্লাহ
তায়ালা বলেন, ‘আর যে অলংকারে লালিত পালিত হয়……।’ [সূরা আয্-যুখরুফ, আয়াত :
১৮]
শায়খ উসাইমিন রহ. বলেন, আল্লাহ তায়ালা স্ত্রীদের কথা উল্লেখ করেছেন
স্বামীদের জন্য। কারণ, স্বামীই হলেন স্ত্রীর কামনাকারী এবং তার প্রতি
মোহিত। এ জন্যই জান্নাতে পুরুষদের জন্য স্ত্রীদের কথা বলা হয়েছে আর নারীদের
জন্য স্বামীদের ব্যাপারে নিরবতা অবলম্বন করা হয়েছে। কিন্তু এর দাবি শুধু
এই নয় যে, তাদের স্বামী থাকবে না। বরং তাদের জন্যও আদম সন্তানদের মধ্য থেকে
স্বামী থাকবে।
দুনিয়ায় নারীদের অবস্থা নিম্নোক্ত প্রকারগুলোর বাইরে নয় :
১- হয়তো সে বিয়ের আগেই মারা যাবে।
২- কিংবা সে মারা যাবে তালাকের পর অন্য কারো সাথে বিয়ের আগে।
৩- কিংবা সে বিবাহিতা কিন্তু –আল্লাহ রক্ষা করুন- তার স্বামী তার সঙ্গে জান্নাতে যাবে না।
৪- কিংবা সে তার বিয়ের পরে মারা যায়।
৫- কিংবা তার স্বামী মারা গেল আর সে আমৃত্যু বিয়ে ছাড়াই রইল।
৬- কিংবা তার স্বামী মারা গেল। তারপর সে অন্য কাউকে বিয়ে করল।
দুনিয়াতে নারীদের এ কয়টি ধরনই হতে পারে। আর এসবের প্রত্যেকটির জন্যই জান্নাতে স্বতন্ত্র অবস্থা রয়েছে :
১- যে নারী বিয়ের আগে মারা গেছেন আল্লাহ তাকে জান্নাতে দুনিয়ার কোনো
পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দেবেন। কারণ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেয়ামতের দিন
যে দলটি প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের চেহারা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত
উজ্জ্বল; আর তৎপরবর্তী দলের চেহারা হবে আসমানে মুক্তার ন্যায় ঝলমলে
নক্ষত্র সদৃশ উজ্জ্বল। তাদের প্রত্যেকের থাকবে দু’জন করে স্ত্রী, যাদের
গোশতের ওপর দিয়েই তাদের পায়ের গোছার ভেতরস্থ মজ্জা দেখা যাবে। জান্নাতে
কোনো অবিবাহিত থাকবে না।’ [মুসলিম : ৭৩২৫]
শায়খ উসাইমিন রহ. বলেন, যদি ইহকালে মহিলার বিয়ে না হয়ে থাকে তবে আল্লাহপাক
তাকে জান্নাতে এমন একজনের সঙ্গে বিয়ে দেবেন যা দেখে তার চোখ জুড়িয়ে যাবে।
কারণ, জান্নাতের নেয়ামত ও সুখসম্ভার শুধু পুরুষদের জন্য নয়। বরং তা নারী ও
পুরুষ উভয়ের জন্য বরাদ্দ। জান্নাতের নেয়ামতসমূহের একটি এই বিয়ে।
২- তালাকপ্রাপ্ত হয়ে আর বিয়ে না করে মারা যাওয়া মহিলার অবস্থাও হবে অনুরূপ।
৩- একই অবস্থা ওই নারীর, যার স্বামী জান্নাতে প্রবেশ করেন নি। শায়খ
উসাইমিন রহ. বলেন, ‘মহিলা যদি জান্নাতবাসী হন আর তিনি বিয়ে না করেন কিংবা
তাঁর স্বামী জান্নাতি না হন, সে ক্ষেত্রে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করলে সেখানে
অনেক পুরুষ দেখতে পাবেন যারা বিয়ে করেন নি।’ অর্থাৎ তাদের কেউ তাকে বিয়ে
করবেন।
৪- আর যে নারী বিয়ের পর মারা গেছেন জান্নাতে তিনি সেই স্বামীরই হবেন যার কাছ থেকে ইহলোক ত্যাগ করেছেন।
৫- যে নারীর স্বামী মারা যাবে আর তিনি পরবর্তীতে আমৃত্যু বিয়ে না করবেন, জান্নাতে তিনি এ স্বামীর সঙ্গেই থাকবেন।
৬- যে মহিলার স্বামী মারা যায় আর তিনি তার পরে অন্য কাউকে বিয়ে করেন, তাহলে
তিনি যত বিয়েই করুন না কেন জান্নাতে সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গী হবেন। কারণ,
আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মহিলা তার সর্বশেষ স্বামীর জন্যই থাকবে।’ [জামে‘ ছাগীর :
৬৬৯১; আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিস আস-সাহিহা : ৩/২৭৫]
হযরত হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘যদি তোমাকে এ
বিষয় খুশি করে যে তুমি জান্নাতে আমার স্ত্রী হিসেবে থাকবে তবে আমার পর আর
বিয়ে করো না। কেননা জান্নাতে নারী তার সর্বশেষ দুনিয়ার স্বামীর সঙ্গে
থাকবেন। এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর
তাঁর স্ত্রীদের জন্য অন্য কারো সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে জড়ানো হারাম করা হয়েছে।
কেননা তাঁরা জান্নাতে তাঁরই স্ত্রী হিসেবে থাকবেন।’ [বাইহাকী, আস-সুনান
আল-কুবরা : ১৩৮০৩]
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার ঈদের সালাতে খুতবায়
নারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘হে নারী সম্প্রদায়, তোমরা বেশি বেশি সদকা করো।
কেননা, আমি জাহান্নামের অধিবাসী তোমাদের বেশি দেখেছি।’ মহিলারা বললেন, কেন
হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, ‘তোমরা অধিকহারে অভিশাপ দাও এবং স্বামীর
অকৃজ্ঞতা দেখাও। বুদ্ধিমান পুরুষকে নির্বোধ বানাতে অল্প বুদ্ধি ও খাটো
দীনদারির আর কাউকে তোমাদের চেয়ে অধিক পটু দেখিনি।’ তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর
রাসূল, আমাদের জ্ঞান ও দীনদারির ঘাটতি কী? তিনি বললেন, ‘মহিলাদের সাক্ষী
কি পুরুষদের সাক্ষীর অর্ধেক নয়?’ তাঁরা বললেন, জী, হ্যাঁ। তিনি বললেন,
‘এটিই তাদের জ্ঞানের স্বল্পতা। যখন তাদের মাসিক শুরু হয় তখন কি তারা সালাত ও
সাওম (রোযা) বাদ দেয় না?’ তাঁরা বললেন, জী, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘এটিই
তাদের দীনদারিতে স্বল্পতা।’ [বুখারি : ৩০৪]
আরেক হাদীসে বলা হয়েছে, ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতের সবচে কম
অধিবাসী হবে নারী।’ [মুসলিম : ৭১১৮; মুসনাদ আহমদ : ১৯৮৫০]
অন্যদিকে আরেক সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে, জান্নাতে দুনিয়াবাসীর স্ত্রী হবে তার
দুনিয়ার স্ত্রী থেকে দু’জন। যেমন ইমাম মুসলিম রহ. বলেন, ‘আমার কাছে আমর
নাকেদ ও ইয়াকূব ইবনে ইবরাহিম দাওরাকি ইবন উলাইয়া থেকে বর্ণনা করেন, আর
শব্দগুলো ইয়াকূবের। উভয়ে বলেন, আমাদের কাছে ইসমাঈল ইবনে উলাইয়া বর্ণনা
করেন, আমাদেরকে আইয়ূব মুহাম্মদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জান্নাতে
পুরুষ না নারীর সংখ্যা বেশি হবে তা নিয়ে তারা পরস্পর গর্ব বা বিষয়টি নিয়ে
আলোচনা করছিলেন। তখন আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আবুল কাসেম
(রাসূলুল্লাহ) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেন নি, ‘কেয়ামতের দিন
যে দলটি প্রথম জন্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের চেহারা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত
উজ্জ্বল; আর তৎপরবর্তী দলের চেহারা হবে আসমানে মুক্তার ন্যায় ঝলমলে
নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল। তাদের প্রত্যেকের থাকবে দু’জন করে স্ত্রী যাদের
গোশতের ওপর দিয়েই তাদের পায়ের গোছার ভেতরস্থ মজ্জা দেখা যাবে। আর জান্নাতে
কোনো অবিবাহিত থাকবে না।’ [মুসলিম : ৭৩২৫]
সারকথা, নারীদের প্রত্যাশা ও আত্মবিশ্বাস রাখা উচিত যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী হবেন না।
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি মুসলিম নারীদেরকে জান্নাতুন নাঈম দানে
কামিয়াব করুন। আল্লাহ তাদেরকে হেদায়াতের পথের পথিক ও পথিকৃৎ বানিয়ে দেন এবং
তাদের কাছ থেকে নারীর শত্রু ও ধ্বংসকারী নারী ও পুরুষ শয়তানকে দূরে সরিয়ে
দেন। সবশেষে আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম,
তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর ওপর শান্তি বর্ষণ করুন। আমিন।
No comments:
Post a Comment